৬মাসের বাচ্চাদের কি কি খাবার দেওয়া যায়
আপনারা অনেকেই এমন আছেন যারা বাচ্চাদের খাবার বিষয়ে খুব সতর্ক থাকেন। এবং চেষ্টা করেন ভালো ও পুষ্টিকর খাবার দিতে। কিন্তু বুঝে উঠতে পারেন না কোন খাবার দিতে হবে বা কোন খাবার দিলে বাচ্চার জন্য ভালো হবে। তাদের জন্য আমাদের এই আর্টিকেলটি। এর মাধ্যমে আমরা জানাতে চেষ্টা করেছি যে- ছয় মাসের বাচ্চাদের কি কি খাবার দেওয়া যায় এর মাঝে রয়েছে ৬ মাসের বাচ্চার প্রথম খাবার
ছয় মাস বাচ্চার সেরেলাক, ৬ মাস শিশুর বিকাশ সম্পর্কে এর মাঝে আমরা আরো কিছু তথ্য দিয়েছি সেগুলো হচ্ছে ছয় মাসের বাচ্চার যত্ন,ছয় মাসে বাচ্চার ওজন,৬ মাসে বাচ্চা কি কি করতে পারে ইত্যাদি বিস্তারিত তথ্য গুলো জানতে পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন।
6 মাস বাচ্চার প্রথম খাবার
শিশু জন্মের পর থেকে অর্থাৎ ১মাস হতে ৫মাস পর্যন্ত মায়ের বুকের দুধ ছাড়া অন্য কোন খাবার দেওয়া যাবে না। কিন্তু ৬ মাস পর থেকে শিশুকে বাড়তি খাবার দিতে হবে। শিশুর মেধাবিকাশ,পুষ্টি ও সুস্বাস্থ্যের জন্য এ বাড়তি খাবার প্রয়োজন। এছাড়া৬ মাস পর থেকে শিশুর খিদের পরিমান বেড়ে যায়। ফলে মায়ের বুকের দুধে শিশুর পেট ভরে উঠে না।
এর জন্য শিশুকে বাড়তি খাবার যেমন, বিভিন্ন রকম সবজি দিয়ে সবজি খিচুড়ি, মাছ বা মুরগির মাংস নরম করে রান্না করতে হবে সুজি অথবা ডিম সিদ্ধ করে খাওয়াতে হবে। পাশাপাশি বেদানা, আঙ্গুর,কলা,খাওয়াতে পারেন অথবা আপেল, কমলা, ফলের রস করে খাওয়াতে পারেন। ছয় মাস বাচ্চার প্রথম খাবার হিসেবে এসব খাবার রাখতে হবে আরও যেসব পুষ্টিকর খাবার আছে সেগুলো বাচ্চার জন্য রাখা যেতে পারে।
ছয় মাস বাচ্চার সেরেলাক
ছয় মাস বাচ্চার সেরেলাক বাচ্চাকে বুকের দুধ পাশাপাশি সেরেলাক ও খাওয়ানো যায়। এতে রয়েছে পটাশিয়াম, ভিটামিন সি ও কার্বোহাইড্রেট যা শিশু বৃদ্ধি বিকাশ ও সুন্দর স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। দিনে একবার খাওয়াতে হবে তবে প্রতিদিন না সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন। ছয় মাসের বাচ্চার জন্য, Nestle Cerelac Fortified Baby Cereal With Milk Wheat এটা খাওয়াতে হবে। পানি ফুটিয়ে হালকা ঠান্ডা করে পরিমাণ মতো সেরেলাক মিশিয়ে খাওয়াতে হবে।
৬মাসের বাচ্চার জন্য বাড়িতে কিছু উপকরণ দিয়েও সেরেলাক বানানো যায় উপকরণগুলো- আতপ চাল, ডাল, গম, সাবুদানা, বাদাম, ভুট্টা, ইত্যাদি। বাড়ির এসব উপকরণ দিয়ে সেরেলাক বানিয়ে ৬ মাসের বাচ্চাকে খাওয়ানো যাবে।
ছয় মাসের শিশুর বিকাশ
এ সময় একটা শিশুর অনেক কিছুর বিকাশ ঘটে। ৬ মাসের শিশু অনেকটাই বড় হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে একটি শিশুর 6 মাসে কিছু বিকাশ ঘটে সেগুলো হলো-
- একা বসতে পারে সাহায্য ছাড়া।
- অনেক শব্দ করতে পারে।
- কোন কিছু ধরার চেষ্টা করে।
- পরিচিত মুখগুলোর কথা শুনলে ফিরে তাকায়।
- বাইরে ঘুরতে যাবার জন্য কোলে ওঠে কান্না শুরু করে।
- এ মাসে থেকে বাবুর হাড় গুলো শক্ত হতে থাকে।
- হামাগুড়ি দিতে শিখে।
ছয় মাস বয়সী শিশুর ক্ষেত্রে এই বিকাশগুলো যদি না দেখা যায় তাহলে চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু অনেক সময় অনেক বাচ্চা দের একটু দেরিতে এসব বিকাশ ঘটে। যদি কারণবশত শিশু বিকাশের কোন সমস্যা বুঝতে পারা যায় তাহলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।
ছয় মাসের শিশুর যত্ন
এ সময়টাই শিশুকে অনেক যত্নে,ভালোবাসায়,ও নিরাপত্তায় রাখতে হয়। বিশেষ করে শীতকালে এ সময় শিশুদের ঘন ঘন ঠান্ডা লাগে এ ঠান্ডা থেকে শ্বাসকষ্ট হয়। সেজন্য শীতের গরম কাপড় শিশুকে পড়িয়ে রাখতে হবে। হাতে পায়ে মোজা ও কানের টুপি দিয়ে রাখতে হবে যেন কানে বাতাস না ঢুকে।
শীতকালে শিশুদের ঘরের বাইরে কম বের করতে হবে। নিয়মিত গরম পানি দিয়ে গোসল করাতে হবে। ঠান্ডা জাতীয় খাবার খাওয়ানো যাবে না। শীতকালে শিশুদের ত্বক ভালো রাখার জন্য বেবি লোশন ও শিশুদের ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। যেন শিশুর ত্বক ফেটে যায়।
অনেক সময় গরমেও শিশুর ঠান্ডা লাগা বিষয়টা দেখা যায়। অনেকেই ভাবেন গরমে আবার ঠান্ডা কিভাবে লাগে। গরমকালে শিশুর শরীরে থাকা ঘাম বসে গিয়ে শিশুর ঠান্ডা লেগে যায়। আবার অনেক ক্ষেত্রে বাচ্চার বিভিন্ন স্থানে যেগুলোতে ভাজ পড়ে সে জায়গা গুলোতে চামড়া উঠে যায় লাল লাল দাগ দেখা যায়। এগুলো গরম কালে ঘেমে থাকার জায়গাগুলো না শুকানোর ফলে এরকম হয়। তাই গোসলের পর ভাঁজ পড়া জায়গা গুলোতে পাউডার দিয়ে দিতে হবে প্রতিদিন এবং লক্ষ্য রাখতে হবে যেন জায়গা গুলো না ঘেমে যায়।
শিশুকে সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জায়গায় খেলতে দিতে হবে। ছয় মাসের শিশুরা বড় হওয়ার ফলে হাতের কাছে যা পায় তাই মুখে দেয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে যেন এটা সেটা মুখে না দেয়। স্যান্ডেল, ঝাড়ু ও এসব জাতীয় কিছু থাকলে শিশুর নাগালে থেকে দূরে রাখতে হবে।
শিশু রোগ মুক্ত থাকার জন্য যে টিকা গুলো দিতে হয় সেগুলো নিয়মিত দিতে হবে। কোন টিকা যেন বাদ না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কোন টিকা যদি বাদ পড়ে তাহলে সরকারি ক্লিনিক গুলোতে যোগাযোগ করতে হবে এবং বাদ পড়া টিকা গুলো দিয়ে দিতে হবে।
৬মাসের শিশুর ওজন
ছয় মাসের শিশুর 7 থেকে 8 কেজি ওজন হয়। শিশুর জন্ম পর থেকে আসতে আসতে যেমন শিশু বাড়তে থাকে। ঠিক তেমনি শিশুর ওজনও বাড়তে থাকে। প্রত্যেক মাসে শিশুর ওজন বাড়তে থাকবে। এটা স্বাভাবিক বিষয় কিন্তু স্বাভাবিকের চেয়ে অস্বাভাবিক ভাবে যদি ওজন বাড়ে বা ওজন কমে যায় তাহলে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
শিশুর ওজন কম হলে করণীয়
শিশুর ওজন তুলনামূলকভাবে কম হলে শিশু ডাক্তারকে দেখাতে হবে। এবং সঠিক নিয়মে শিশুর চিকিৎসা নিতে হবে। অথবা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী শিশুর জন্য স্বাস্থ্যকর উপায় মেনে ওজন বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। শিশুদের পেট অনেকটাই ছোট তাই তাদের এটা সেটা খেতে দেওয়া যাবে না। নিয়মিত সুষম খাবার দিতে হবে এবং সাথে পুষ্টিকর খাবার রাখতে হবে। পরিমাণ মতো পানিও সঠিক নিয়মে ঘুম পাড়াতে হবে।
লেখকের মন্তব্য
আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের ৬ মাসের বাচ্চা সম্পর্কে ধারণা দিয়েছি। এবং আশা করছি যে আর্টিকেলটি পরে আপনি উপকৃত হবেন। যদি এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে সঠিক তথ্যটি পেয়ে উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে আপনার পরিচিত বন্ধুবান্ধবদের কাছে শেয়ার করুন।
এরকম নতুন নতুন এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানার থাকলে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। ধন্যবাদ
জুয়াদ্দার এআই এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রত্যেকটি কমেন্টের উত্তর দেওয়া হয়
comment url